অবশেষে গ্রিসের ঐতিহাসিক ইয়েনি যামি মসজিদ, ১শ’ বছর ধরে যেখানে বন্ধ ছিল নামাজ আদায়। অর্থোডক্স খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠদের দেশটিতে গত শতক থেকেই বহাল ছিল এমন সিদ্ধান্ত। সম্প্রতি, মত পাল্টায় দেশটির কর্তৃপক্ষ। এক শতাব্দি পর, বুধবার আদায় হয় ঈদুল ফিতরের নামাজ।
অনন্য স্থাপত্যশৈলীর প্রাচীন নিদর্শনটি কখনো ব্যবহার হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে, কখনো বা জাদুঘর। আদতে এক সময় যা ছিল মসজিদ। একশ বছর পর, আবারও মুসলিমদের জন্য খুলে দেয়া হলো গ্রিসের ঐতিহাসিক ইয়েনি যামি মসজিদ। পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিমরা ফিরে পান হারানো ঐতিহ্য।
এদিকে গ্রিসের এক নাগরিক বলেন, গ্রিসে, মুসলিম আর সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এ ধরনের উদ্যোগ তারই বার্তা দেয়। আমার দেশ, আমার ধর্মকে সম্মান করছে। প্রার্থনা করতেও সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। সুতরাং, এটি খুবই ভালো আর গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।
অটোম্যান শাসনামলে মসজিদটি তৈরি হয়েছিলো মূলত ডনমেহ সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য। যারা ইহুদি থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। ১৯২৩ সালে, গ্রিস এবং তুরস্কের মধ্যকার চুক্তি অনুসারে বিনিময় হয় দু’দেশের সংখ্যালঘু মুসলিম ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। এর ফলে বন্ধ হয়ে যায় মসজিদটিতে মুসলিমদের প্রার্থনা।
এদিকে গ্রীসের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে অবস্থিত এই মসজিদ সম্পর্কে অজানা ছিলেন অনেকেই। সম্প্রতি, দেশটির কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে মসজিদটিতে ঈদের নামাজে অংশ নেন ৭০ মুসল্লি। এসময়ে এক মুসল্লি বলেন, আমাদেরকে বলা হয়েছে ১শ’ বছরের মধ্যে এই প্রথম, মসজিদটির দরজা খুলে দেয়া হবে। তাই নামাজ পড়তে এসেছিলাম।
এতদিন এটাকে জাদুঘর হিসেবে চিনলেও, জানতাম না এটা একটা মসজিদ। প্রায় ৬৩ ব্ছর যাবৎ এখানে আছি, আজকেই প্রথম দেখলাম। প্রায় এক শতাব্দিরও বেশি সময়ের আগের ((১৯০২)) মসজিদটির স্থাপত্যে দেখা মেলে ইসলামিক কারুকার্যের।
১৯০২ সালে, ইতালিয়ান স্থপতি ভিতালিনো পোসেলির হাত ধরেই গড়ে ওঠে অনন্য নিদর্শনটি। ইউরোপের দেশ, গ্রিসের অধিকাংশই অর্থোডক্স খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। ২০২০ সাল পর্যন্তও দেশটিতে মুসলিমদের জন্য ছিল না কোনো মসজিদ। বর্তমানে, মোট জনসংখ্যার মাত্র ২ শতাংশ ইসলাম ধর্মের অনুসারী।